মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কমলগঞ্জ:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী শব্দকর সম্প্রদায়। এ সম্প্রদায়ের ৮০ ভাগ লোক হতদরিদ্র ও দিনমজুর। করোনাভাইরাসে একসপ্তাহ ধরে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার কর্মহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
কিন্তু সরকারিভাবে গুটিকয়েক পরিবার বাদে অধিকাংশ পরিবারে জোটেনি সরকারি বা বেসরকারি খাদ্য সহায়তা। দ্রুত পরিবারগুলোকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী শব্দকর সম্প্রদায়ের। উপজেরার সুরান্দপুর, সরিষকান্দি, মইডাইল, তিলকপুর, রামচন্দ্রপুর, ধাতাইলগাঁও, লক্ষীপুর, নছরতপুর, জালালিয়া, নাগড়া, বালীটেকি, শ্রীনাথপুর, ছলিমবাজার, পতনউষারসহ প্রায় ৩৭টি গ্রামে দেড় হাজার পরিবার বসবাস করছেন।
এদের মধ্যে বেশিই ভাগ দিনমজুর। ভূমিহীন। এদের অধিকাংশই নানা পেশায় জড়িত। কেউ রিকশাচালক, কেউ ভিক্ষুক, কেউ ঠেলাচালক, কেউ বাদ্য বাজান, কেউ দোকান কর্মচারী। দেড় হাজার পরিবারে মধ্যে প্রায় ৫০০ পরিবার খুবই দরিদ্র।
করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কার দেশে সব কিছু বন্ধ হওয়ায় গত ১ সপ্তাহ ধরে তারা কর্মহীন। কারো রোজগার নেই। সবাই বাড়িতে না খেয়ে বসে দিন কাটাচ্ছে। এই হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে দেখার মতো কেউ নেই। ভ্যান-ঠেলা-রিকশা চালিয়ে ও ভিক্ষাবৃত্তি করে চলা জীবন এখন ঘরে আবদ্ধ।
পনউষার ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের রিকশাচালক হরেন্দ্র শব্দকর বলেন, ৪ সদস্যের পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে রয়েছি। সরকারি সহযোগিতা পাইনি। রিকশা চালিয়ে আমার সংসার চলতো। খুবই কষ্টে জীবন চলছে।
আলীনগর ইউনিয়নের শ্রীনাথপুর গ্রামের চা স্টলের কর্মচারী সজল শব্দকর বলেন, মালিক দোকান বন্ধ করায় বেকার দিন কাটছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। কি করব ভেবে পাচ্ছি না।
তারা অভিযোগ করেন এখন পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধি তাদের খোঁজ নিতে বাড়িতে যাননি। এভাবে প্রতিটি শব্দকর পাড়ায় দিন কাটছে অভাবি মানুষদের।
কমলগঞ্জ উপজেলা শব্দকর উন্নয়ন পরিষদের উপদেষ্টা আহমদ সিরাজ বলেন, এরা দিন আনে দিন খায়। এসব শব্দকর পরিবারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ সহায়তার আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, সরকারি নির্দেশ অনুয়ায়ী হতদরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা করতে হবে। সরকারি ত্রাণ তালিকায় এসব জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিয়ে দিতে বলা হয়েছে। যদি কেউ ত্রাণ না পেয়ে থাকে তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।