প্রতিদিন ডেস্ক:
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের কজন রণাঙ্গনে, আর কজন ‘রেখা-শ্রীদেবীর ছবি’ দেখেছেন-এমন প্রশ্ন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। একই সঙ্গে একাত্তরে কলকাতায় অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামে এক সংগঠনের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি করেন ফারুক।

খালেদা জিয়ার এই উপদেষ্টা বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা বলছে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল নয়। আমার প্রশ্ন বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কতজন ছিলেন কলকাতায়, কজন ছিলেন রণাঙ্গনে, কজন মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়েছেন, কজন রেখা-শ্রীদেবীর ছবি দেখেছেন ভারতের বসে?’

এ সময় সরকারের কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কলকাতায় অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের দাবি করে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, “রাজাকারের তালিকা তৈরি করা হবে।” আমি অনুরোধ জানাবো, এই অবৈধ মন্ত্রীর কাছে দয়া করে একাত্তরে কলকতায় বসে কারা সময় অতিক্রান্ত করেছেন, কারা সেখানে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং না নিয়ে আরাম-আয়েশ করে সময় কাটিয়েছেন তাদের একটা তালিকা তৈরি করুন।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে নবম সংসদের এই সদস্য বলেন,‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দাবিদার- আমি এটা বিশ্বাস করতে পারি না। যদি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিই হয়ে থাকে; তাহলে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, সাবেক সেনা বাহিনী প্রধান, সাবেক রাষ্ট্রপতি যিনি বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এনে দিয়েছেন, যিনি বহির্বিশ্বে তলাবিহীন দেশকে ঝুড়িতে পরিণত করেছেন তার স্ত্রী কেন কারাগারে?’

ফারুক প্রশ্ন করে আরও বলেন, ‘কোন কারণে তিনি কারাগারে, কী কারণে কারাগারে? এক কোটি টাকা কত কোটি টাকা হয়েছে-গোয়েন্দা নাই; ব্যাংকের তল্লাশি করুন ব্যাংকে কত টাকা আছে। আসল উদ্দেশ্য হলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে তারা (সরকার) ভয় পায়, শহীদ জিয়ার দলকে তারা ভয় পায়,তারেক রহমানকে তারা ভয় পায় বলে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপিকে জড়ানো হয়।’

বিএনপি ‘হতাশ’ দল নয় মন্তব্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন,‘এই সরকারকে বলতে চাই, আপনারা গণতান্ত্রিক সরকার নন। অবৈধভাবে ক্ষমতায় আর বেশি দিন টিকে থাকতে পারবেন না। সময় খুব বেশি নাই। এখনো সময় আছে দয়া করে দেশনেত্রীর কোনো অঘটন ঘটার আগে তাকে মুক্তি দিন, তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’

এ সময় নেতাকর্মীদের আন্দোলনের জন্য দলকে সংগঠিত করার আহ্বানও জানান বিএনপির এই নেতা।

কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ছাত্রদলের নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।