জিয়াউর রহমান:
লছে মাহে রবিউল আউয়াল৷ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম, হিজরত ও ওফাতের মাস৷ এ মাস এলেই উম্মত হিসেবে মানুষের ভেতর রাসুলের সিরাত চর্চার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়৷ নিঃসন্দেহে রাসুলের জীবনে রয়েছে আমাদের জন্যে উত্তম আদর্শ৷ সেই আদর্শ ধারণ করতে হলে সিরাত চর্চার বিকল্প নেই৷
তাই আসুন সিরাত চর্চার অংশ হিসেবে উম্মতের উপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হকসমূহ সম্পর্ক কিছু মুযাকারা করি
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত ও রিসালাতের উপর ঈমান আনা৷ তিনি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যা কিছু নিয়ে এসেছেন, সবকিছুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা৷ এটাও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা যে, তিনি মানব জাতি ও জিন জাতির প্রতি কিয়ামত পর্যন্তের জন্য প্রেরিত হয়েছেন৷
২. রাসুলের প্রতি উম্মতের গুরুত্বপূর্ণ হক হচ্ছে, তাঁর অনুসরণ করা৷ তাঁর ইত্তেবা করা৷ তিনি যা হুকুম করেছেন, সেগুলো পালন করা৷ যা নিষেধ করেছেন, সেগুলো বর্জন করা৷
৩. সর্বাবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করা৷ ইন্তেকালের পরেও সেই সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা৷ তাঁর মর্যাদা সমুন্নত রাখাকেই নিজের জীবনের সাফল্য ও সৌভাগ্য মনে করা৷ তাঁর মর্যাদার উপর আঘাত এলে সর্বাত্মক প্রতিরোধ করা৷ তাঁর আলোচনায়, তাঁর হাদিস বর্ণনায়, তাঁর সিরাত আলোচনায় সম্মানের সঙ্গে তাঁকে স্মরণ করা ওয়াজিব৷
৪. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীয়ত, সুন্নাত ও আনীত বিধানকে সম্মান করা৷ এর উপর আমল করা৷ আর যে তাঁর শরীয়ত ও বিধানকে সম্মান করল না, সে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেই সম্মান করল না৷
৫. অন্য সবার চাইতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি অন্তরে ভালোবাসা পোষণ করা৷ রাসুলের প্রতি ভালোবাসা হবে তুলনাহীন৷ অন্য কারো প্রতি এই ভালোবাসার সমকক্ষতা নেই৷ কেননা রাসুলের প্রতি ভালোবাসা ইবাদত৷ আল্লাহর নৈকট্য লাভের কারণ৷ অন্য ভালোবাসাগুলো সরাসরি ইবাদত নয়, স্বভাবজাত বিষয়৷
৬. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠ করা৷ স্বাভাবিক অবস্থায় কিংবা যখনই তাঁর নাম আলোচনা হবে দরূদ পাঠ করা উম্মতের উপর কর্তব্য৷ কেননা এটি এমন এক হক, যা আদায়ের প্রতি আল্লাহ তাআলা সরাসরি কুরআনে কারিমে নির্দেশ দিয়েছেন৷
৭. তাঁর দাওয়াতি মিশন বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগি হওয়া৷ তাঁর দাওয়াতের সর্বত্র প্রচার-প্রসার করা৷ যেরকম সাহাবায়ে কেরাম জান-প্রাণ, অর্থবিত্তসহ যাবতীয় কিছু দীন প্রতিষ্ঠা ও বিজয়ের লক্ষে উৎসর্গ করেছিলেন৷
৮. জীবনের সব বিষয়ে একমাত্র তাঁকেই আদর্শ এবং অনুসরণীয় হিসেবে জানা এবং মানা৷
৯. তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবায়ে কেরামের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা৷ তাঁদের জন্যে দুআ ও ইস্তেগফার করা৷ তাঁদের শানের বিপরীত মন্তব্য করা থেকে নিজের যবানকে হেফাজত করা৷
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ
লেখক- ইমাম ও খতিব : আম্বরখানা জামে মসজিদ, সিলেট।